আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রিমান্ড শেষে কারাগারে সার্ভেয়ার

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

চাঞ্চল্যকর ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহম্মেদের আদালত এই নির্দেশ দেন। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিন দিনের রিমান্ড শেষে এদিন কাউছার আহমেদকে আদালতে প্রেরণ করে।
গত ২৪ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক (তদন্ত কর্মকর্তা) ঈসমাইল হোসেন গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামস জগলুল হোসেনের আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এলএ শাখার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। ১৬ জানুয়ারি এই ঘটনায় দুদকের সমন্বিত জেলা নারায়ণগঞ্জের সহকারি পরিচালক ওমর ফারুক বাদী হয়ে মামলা করেন। যার নং ২(১)২৪)।
দুদকের মামলা সূত্রে জানা গেছে, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার স্মারক নং ০০,০১,৬৭০০ ৭০৯, ৯৯, ০০১, ২৪. ১৯২১ ১৬ জানুয়ারি মূলে প্রাপ্ত এজাহার দায়েরের অনুমোদন পত্রের সাথে সংযুক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ এর স্মারক নং-০৫. ৪১. ৬৭০০. ১০০. ০৬. ০০৬. ২৩. ২৫ (সং), ১৪ জানুয়ারি মূলে দেখা যায় যে, বিগত ১০ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নারায়ণগঞ্জ এর সম্মুখে প্রধান সড়কে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ওরফে সুমনকে একটি কাগজের কার্টনসহ সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি করতে দেখে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী রিফাত হোসেন ঘটনাটি নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রবিন মিয়াকে অবহিত করেন। পরে তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসক মৌখিকভাবে নির্দেশ প্রদান করলে রবিন মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহিদুল ইসলাম সুমনকে একটি খাকি ও কালো মিশ্রিত রঙের কার্টনসহ সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে কার্টন খুলে টাকা দেখতে পান। যা প্রাথমিক গণনায় ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পরে টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সুমন জানায় টাকা তার নিকট আত্মীয়ের। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে ওই নিকট আত্মীয়ের নম্বর নিয়ে জনৈক রানাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অবহিত করেন যে, উক্ত টাকা তার নিজের দাবি করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নারায়ণগঞ্জ এর ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদ তাকে মোবাইলের মাধ্যমে অনুরোধ করেন। পরে সুমনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, কাউছার আহমেদ তাকে ঢাকার জনৈক ইকবাল নামীয় ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।’
তবে, মামলায় জনৈক সার্ভেয়ার ইকবাল ও রানার নাম ভিন্নভাবে উঠে আসলেও তাদেরকে আসামি না করায় নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। বলা হচ্ছে, তাদেরকে কোনো এক বিশেষ মহলের কারণে ছাড় দিতেই মামলায় আসামি করা কিংবা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়নি। এছাড়াও গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদকে আদালতে প্রেরণ করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন না করায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
অন্যদিকে মামলার অপর আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারি ফতুল্লার কায়েমপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম সুমনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি দুদক। অপরদিকে জেলা কারাগারে আটক সার্ভেয়ার কাউছার আহমেদকে জামিন করানোর জন্য একটি মহল ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ করছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তবে, তাকে জামিন করানোর পেছনে সিন্ডিকেটের নেপথ্য নায়ক হোয়াইট ক্রিমিন্যাল খ্যাত সেই ব্যক্তি কলকাঠি নাড়ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।